Breaking

Sunday, September 16, 2018

খুন নয়, আত্মহত্যা করেছিলেন তাসফিয়া: পুলিশ

খুন নয়, আত্মহত্যা করেছিলেন তাসফিয়া: পুলিশ......

সাড়ে চার মাস ধরে তদন্তের পর রোববার চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার সরকার।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) আবু বকর সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, ভিসেরা প্রতিবেদন ও প্রত্যক্ষদর্শী ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, তাসফিয়া আত্মহত্যা করেছে।”
তাসফিয়ার বাবার করা হত্যামামলার সন্দেহভাজন ছয় আসামিকেও অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানানো হয় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।
আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ফরেনসিক প্রতিবেদনে তাসফিয়ার শরীরে কোনো বিষক্রিয়া না পাওয়া এবং ডিএনএ প্রতিবেদনেও ‘ভিন্ন কিছু’ না পাওয়ার কথা জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবু বকর।
তবে কী কারণে তাসফিয়া আত্মহত্যা করেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।
গত ২ মে পতেঙ্গার ১৮ নম্বর ঘাট থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ; তখন তার পরিচয় জানা যায়নি।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাথরের ওপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা লাশের ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর জানা যায়, এই তরুণী নগরীর ও আর নিজাম রোডের বাসিন্দা মো. আমিনের মেয়ে তাসফিয়া আমিন। তিনি পড়েন নগরীর সানশাইন ইংলিশ গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণিতে।
পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, ফেইসবুকে অন্য একটি স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রের সঙ্গে তাসফিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, যদিও তাতে আপত্তি ছিল এই তরুণীর পরিবারের।
লাশ উদ্ধারের আগের দিন ১ মে তারা বেড়াতে বের হয়ে গোলপাহাড় এলাকায় চায়না গ্রিল নামে একটি রেস্তোরাঁয় খাওয়া-দাওয়া করতে গিয়েছিলেন বলেও অনুসন্ধানে ধরা পড়ে।
তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন পতেঙ্গায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করার পর তাসফিয়ার ওই বন্ধুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওই তরুণের কথিত দুই বড় ভাইকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
মামলাটি প্রথমে পতেঙ্গা থানা পুলিশ তদন্ত করে। এক মাস পর ৭ জুলাই তদন্তের ভার যায় গোয়েন্দা পুলিশের কাছে।
ডিবি কর্মকর্তা বকর বলেন, “মামলার দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থলের আশে পাশে থাকা লোকজন ও দোকানিদের সাথে কথা বলি।
“তারা জানিয়েছে, তাসফিয়া বেশ কিছুক্ষণ একা বসে থাকার পর পাথরের ওপর দিয়ে হেঁটে নদীর দিকে গিয়েছিল। পরে নদীর দিক থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেয়ে তারা টর্চ নিয়ে খুঁজেছিলেন।”
তাসফিয়া আমিনের মৃত্যুকে হত্যা দাবি করে তার বিচার দাবিতে মানববন্ধনও হয়েছিল
তাসফিয়া আমিনের মৃত্যুকে হত্যা দাবি করে তার বিচার দাবিতে মানববন্ধনও হয়েছিল
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১ মে তাসফিয়া তার বন্ধু প্রেমের এক মাস পূর্তি পালন করতে সন্ধ্যা ৬টায় চায়না গ্রিল রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন। তখন তাসফিয়ার মা তাকে খুঁজে না পেয়ে ওই তরুণের বন্ধুকে ফোন করেন।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আদনানের সাথে সম্পর্কটি তাসফিয়ার পরিবার জানতে পেরে তার কাছ থেকে মোবাইল ও সিম নিয়ে ফেলেন। তারপরও তারা গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন।
চায়না গ্রিলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ আগে জানিয়েছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে দুজন দুটি অটোরিকশায় করে দুদিকে চলে গিয়েছিলেন।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার দিন তাসফিয়ার ধারণা হয়েছিল, তার মা সব জেনে গেছেন।
“সেই ভেবে সে (তাসফিয়া) পতেঙ্গা নেভাল বিচে চলে যায়। কিছুক্ষণ আইল্যান্ডে বসে থেকে সে নদীর পাড়ে পাথরের উপর গিয়ে বসে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কর্ণফুলী নদীর দিকে তাসফিয়া হেঁটে যায় এবং তারপরই একটি চিৎকারের শব্দ আসে।”
তাসফিয়া চায়না গ্রিল থেকে বেরিয়ে যে অটো রিকশায় উঠেছিল, তার ছবি পাওয়া গেলেও নম্বর শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ; পাওয়া যায়নি চালককেও।

No comments:

Post a Comment

Pages